বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের একদিন বাদে সব উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে কথা বলছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থা।
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:সবুজ বাংলা
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপিসহ ১৮টি উন্নয়ন সহযোগী দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে বৈঠকটি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ পরিচালক শরিফুল আলম।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসি সচিব আখতার আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।
বৈঠকে রয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি, ব্রিটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক, ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি, স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিসতিয়াগা, কানাডার হাই কমিশনার অজিত সিং, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার ক্লিনটন পোবকে, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, নেদারল্যান্ডসের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আন্দ্রে কার্স্টেনস, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকোন আরল্ড গুলব্র্যান্ডসেন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইকস, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলার, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, যুক্তরাষ্ট্রের শার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন এবং তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রদূত রামিস সেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন ইসির সঙ্গে সব উন্নয়ন সহযোগীর একসঙ্গে এটিই প্রথম বৈঠক।
ইউএনডিপি ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন, যোগাযোগ সংক্রান্ত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নও আগামী নির্বাচনে সহযোগিতার প্রশ্নে আশ্বাস দিয়েছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক মাসের মাথায় ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গঠিত কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। দেড় মাস শূন্য থাকার পর এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠিত হয়।
গত ২৪ নভেম্বর নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেয়।
বাকি চার কমিশনার হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
দায়িত্ব নেওয়ার পরই ভালো নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সবাইকে ‘আশ্বস্ত’ থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
বিএনপিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন দাবি করে আসছে। এর মধ্যে বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে এসে আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে একটি ধারণা দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছিলেন, “ভোট কবে হবে তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে কতটা সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া হবে, তার ওপর। মোটাদাগে ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে হতে পারে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন।”
এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনও তাদের ভোটের প্রস্তুতির কথা জানাচ্ছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলমান রয়েছে; আর আইন সংস্কার, সীমানা নির্ধারণ, নতুন দল নিবন্ধনের বিষয়ে শিগগিরই কাজ শুরু করতে চায় নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জানতে গত সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।
পরে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে আগামী মে-জুন মাসের মধ্যেই নির্বাচনের জন্য ইসি পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত হবে। ইসি এই মুহূর্তে কী করছে, জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রস্তুতি কী, এ বিষয়গুলো নিয়েই কমিশনের সঙ্গে তারা মতবিনিময় করেছেন।